Monday, January 2, 2017

ইসলামের দাওয়াত

মুসলিমরা সারা বিশ্বে এক নম্বর।কোন দিক থেকে?বাহানা বানাতে! সুরা নিসা – (৪)৭৯ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন – আমি তোমাকে [মোহাম্মাদ (সা:)] সমগ্র মানব জাতির জন্য রাসুল বানিয়ে পাঠিয়েছি। সুরা ইমরান (৩) ১৯ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন – নিঃসন্দেহে আল্লাহর কাছে ইসলাম একমাএ গ্রহন যোগ্য ব্যবস্হা। সুরা ইমরান (৩) ৮৫ নং আয়াত –
আল্লাহ বলছেন – ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন বিধান কবুল হবে না । ১ । ইসলামের দাওয়াত দেওয়া প্রতি মুসলমানের উপর ফরজ সুরা হা-মিম সাজদা (৪১) ৩৩ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন – তার চেয়ে উত্তম কোন ব্যাক্তির হতে পারে যে মানুষদের আল্লাহর দিকে ডাক দেয় এবং সে নিজেই নেক কাজ করে এবং বলে আমি তো মুসলমানদের একজন।
মিসকাত শরীফ – সালাউদ্দিন বইঘর -২য় খন্ড – ১৮৯ নং হাদিস -আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী (সাঃ) বলেন তোমরা যদি একটি আয়াত জান তাহলে সেই আয়াত টা মানুষের কাছে পৌছে দাও ।

মিসকাত শরীফ – সালাউদ্দিন বইঘর -১০ম খন্ড – ৫৩১৯ নং হাদিস – সাইদ রাঃ বলেন রাসু্লুল্লাহ (সাঃ) ফরমান কিয়ামতের দিন নুহ (আঃ) কে উপস্হিত করা হবে এবং তাকে জিজ্ঞেস করা হবে , তুমি কি আমার নির্দেশবলী মানুষদের কাছে পৌছেয়েছিলে?তিনি বলবেন হ্যাঁ পৌছেছিলাম হে আমার রব ।তখন তার উম্মতদের জিজ্ঞেস করা হবে,তিনি কি তোমাদের ,আমার নির্দেশ সমুহ পৌছে দিয়েছিলো?তারা বলবে,আমাদের কাছে কোন সতর্ককারী আসেনি।তখন নুহ (আঃ) কে বলা হবে,তোমার সাক্ষ্য কে আছে,উত্তরে নুহ (আঃ) বলবেন মুহাম্মদ (সাঃ) ও তার উম্মতগন ।রাসু্লুল্লাহ (সাঃ) বলেন ,তখন তোমাদের উপস্হিত করা হবে এবং তোমরা সাক্ষ্য দিবে,অবশ্যই নুহ (আঃ) উম্মতের নিকট আল্লাহর বানী পৌছেয়েছেন।অতপরঃ রাসু্লুল্লাহ (সাঃ) এ আয়াত পাঠ করলেন – আর এভাবেই আমি তোমাদের একটি মধ্যপন্হী উম্মতরুপে প্রতিস্ঠিত করেছি ,যাতে তোমরা মানব জাতির সাক্ষ্য হতে পারো আর রাসুল (সাঃ)তোমাদের জন্য সাক্ষ্য হন।
মিশকাত ৯ম খন্ড – ৪৯১০ নং হাদিস – আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বলেন ,রাসুল সাঃ এরশাদ করেছেন তোমাদের যে কেও কোন অপছন্দনীয় কথা বা কর্ম দেখলে সে যেন বলপূর্বক হাত দ্বারা বাধা প্রদান করে।হাত দ্বারা বাধা প্রদান করা সম্ভব না হলে যেন কথার মাধ্যমে বাধা প্রদান করে।এটাও সম্ভব না হলে সে যেন অন্তর থেকে ঘৃনা করে।আর এটিই দুর্বল ঈমান।

মিশকাত -৯ম খন্ড - ৫১৩৮ – নুমান ইবনে বাসীর রাঃ বলেন রাসুল সাঃ বলেচেন আল্লাহর বিধান পালনে অলসতাকারি ও অমান্যকারী দৃষ্টান্ত ঐ লকদের ন্যায় যারা লটারীর মাধ্যমে কেউ জাহাজের উপরে ,কেউ জাহাজের নিছে স্হান পেয়েছে।তাদের মধ্য যারা নিচে রয়েছে , তারা পানি আনার জন্য উপরে গেলে উপরের লোকদের কষ্ট হত।কাজেই নিচের এক ব্যক্তি একটি কুঠার নিয়ে নৌকার তলা ছিদ্র করতে আরম্ভ করল।তখন উপরের লোকজন এসে বলল,তোমার কি হয়েছে?তুমি নৌকা ছিদ্র করছ কেন?সে বলল উপরে পানি আনতে গেলে তোমাদের কষ্ট হয় আর পানি আমার একান্ত প্রয়োজন।এক্ষনে যদি তারা ঐ ব্যক্তিকে নৌকা ছিদ্র করতে বাধা দেয় তবে তারা তাকে এবং নিজেদেরকে রক্ষা করল।আর যদি তাকে নৌকা ছিদ্র করার কাজে ছেড়ে দেয় তবে তারা তারা তাকে এবং নিজেদের ধ্বংস করল

মিশকাত – ৯ম খন্ড – ৪৯১৫ -আবু বকর ছিদ্দীক রাঃ বলেন আমি রাসুল সাঃ বলতে শুনেছি,নিশ্চয়ই মানুষ যখন কোন অপছন্দ কথা বা কর্ম লক্ষ্য করে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে না ,অচিরেই আল্লাহ তাদের সকলকে শাস্তি দিবেন।অন্য বর্ণনায় যখন কোন সমপ্রদায়ের মাঝে পাপ হতে থাকে এবং প্রতিরোধ করতে সক্ষম ব্যক্তিরা প্রতিরোধ না করে , তখন আল্লাহ সকলকেই শাস্তি দেন।

মিশকাত – ৫১৫২ – জাবির রাঃ হতে বর্নিত তিনি বলে যে রাসুল সাঃ বলেছেন আল্লাহ তা’আলা জিব্রিল কে বললেন ওমুক ওমুক শহর ধ্বংস করে দাও।জিব্রিল বলেন প্রতিপালক তাদের মধ্য এমন এক ব্যক্তি রয়েছেন যিনি এক মূহুর্ত আপনার নাফরমানী করেন না।আল্লাহ বলেন তাকে সহ সকলকে ধ্বংস করে দাও।নিষ্চয়ই তার মুখ আমারা ব্যাপারে এক মূহুর্তও চিন্তিত হয় না।(অর্থাৎ অপরকে দাওয়াত প্রদান করে না)

যাকে ইসলামের দাওয়াত দিবেন সে মানল কি মানল না তা দেখার দায়ীত্ব আপনার না ।
সুরা ক্বাছাছ (২৮) ৫৬ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন – নবী (সাঃ) তুমি যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়াত দিতে পার না তবে হ্যা আল্লাহ যাকে চান তাকে অবশ্যই তিনি হেদায়াত দান করে।

সুরা বাকারা (২) ২৫৬ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন -দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর জোবরদস্তি নয়।(কারন )সত্য এখানে মিথ্যা থেকে পরিস্কার হয়ে গেছে ।তোমাদের মধ্যে যদি কোন ব্যক্তি বাতিল কে অস্বীকার করে ,আল্লাহর উপর ইমাম আনে ,সে যেন এর মাধ্যমে এক শক্তিশালী রশি ধরলো ,যা কোন দিনই ছিড়ে যাবার নয়,আল্লাহ সব শোনেন এবং জানেন।

সুরা গাসিয়া ২১-২২ -আপনি উপদেশ দিন ,আপনি উপদেশ দাতা মাএ,আপনি তাদের শাসক বা দারোগা নন
সুরা যারিয়াত ৫৫ – আপনি উপদেশ দান করুন , নিশ্চয়ই উপদেশ মুমিনকে উপকৃত করে
৪ । দাঈ (Daee
যারা ইসলামের দাওয়াত দেয় তাদের দাঈ (Daee)বলা হয়
দাঈ (Daee) বিভিন্ন প্রকার -Full time , Per time ,Weekly দাঈ (Daee)
৫।দাঈদের (Daee)চরিএ।
দাঈদের (Daee)চরিএ হতে হবে সুন্দর কোরআন ও সহী হাদিসের আলোকে।
সুরা লোকমান ১৭ – ১৮ আয়াত – হে বৎস।ছলাত আদায় কর,সৎ কাজের আদেশ দাও,অসৎ কাজে বাধা প্রদান করা এবং বিপদে ধৈর্য ধারন কর।নিশচয়ই এইটা সাহসিকতার কাজ।অহংকার বশে তুমি মানুষকে ভ্রুকুঙ্কিত কর না এবং পৃথিবী তে গর্বভরে চল না।নিশচয়ই আল্লাহ অহংকারী কে পছন্দ করেন না।সুরা লোকমান – প্রতিটি মানুষের উপদেশ গ্রহন বা দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমে তাওহীদ ও ইমান ঠিক করতে হবে।তাওহীদ ও ইমান ঠিক করলে ইসলামের বাকী কাজ গুলো মানুষ এমনিতেই করবে বা মেনে চলবে ।(নামায,রোজা ইত্যাদি)

৬। ইসলামের দাওয়াত শুরু করবেন কোথা হতে

প্রথম ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে নিজের পরিবার ও নিজের বংশের সকলকে।

সুরা তাহ রিম(৬৬)৬ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন – যারা ইমান এনেছো তোমরা নিজেদেরকে ও নিজেদের পরিবার পরিজনদের (জাহান্নামের)আগুন থেকে বাচাও ।

এরপর ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের ।যারা মনে করে আমরা মুসলমান ঘরে জন্মেছি আমরা মুসলমান অথচ নামাজ না পরলে তারা মুসলমানই থাকছে না, এ বিষয় তারা জানে না,তাদের কে জানাতে হবে।

এরপর ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে আমাদের অমুসলিম ভাই-বোনদের ।

যদি মনে করেন আমি প্রথমে ১০০% ঠিক হব ,আমার পরিবার পরিজন কে ১০০% ঠিক করব ,মুসলমানদের ১০০% ঠিক করব এবং ahmed dedat বা dr zakir naik এর মতো অনেক কিছু পড়ে-জেনে তারপর আমি ইসলামের দাওয়াত দিবো। তাহলে সেই দিন কখনই আসবেনা । যদি এর মাঝে আমার বা আপনার মৃত হয়ে যায়? আল্লাহ না করুক।যতদুর সম্ভব এগুলো ঠিক করতে হবে।

৭। কিভাবে ইসলামের দাওয়াত দিবেন?

হিকমত অবলম্বন করা -

সুরা নাহল ১২৫ – আপনি মানুষ কে হিকমত ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে আল্লাহর পথে দাওয়াত দিন।হিকমত অর্থ – কোরআন ও সহী হাদিস । দাওয়াত বা তাবলীগের জন্য কোরআন ও সহী হাদিস সব চেয়ে বেশী প্রয়োজন।এ ২টি হিকমত বা কৌশল এবং যুক্তির সবচেয়ে বড় মাধ্যম । এ ২টির মাধ্যমে দাওয়াত প্রদান করলে মানুষ সহজেই দাওয়াত কবুল করতে আগ্রহী হয়।

নম্রতার সাথে বিনয়ী ভাবে কথা বলা -

সুরা ইমরান ১৫৯ -আল্লাহর অসীম দয়া যে আপনি তাদের প্রতি কমল হৃদয় এবং নম্র স্বভাবের হয়েছেন যদি আপনি তাদের প্রতি রুহ ও কঠোর স্বভাবের হতেন তাহলে তারা আপনার নিকত হতে সরে যেত সুতারাং আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রয়োজনে তাদের সাথে পরার্মশ করেন এবং আল্লাহর উপর ভরশা করেন।

অএ আয়াতে দাঈদের ৫টি বৈশিষ্ট্য পরিস্ফুটিত হয়েছে। ১ । নম্র স্বভাবের হওয়া ২ । মানুষকে ক্ষমা করা । ৩ । মানুষের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া ও তাদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা ৪ ।কোন কাজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় পরামর্শ করা । ৫।আল্লাহর উপর ভরশা করা।

উত্তম পন্থায় জবাব দেওয়া -

সুরা হা মিম সিজদা ৩৪ -আপনি উত্তম পন্থায় জবাব দিয়ে মন্দ কে পতিহত করুন,দেখবেন যে ব্যক্তির সাথে আপনার শত্রুতা রয়েছে সেও আপনার অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে গেছে।

দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর জোবরদস্তি নয় -

সুরা বাকারা (২) ২৫৬ নং আয়াত – আল্লাহ বলছেন -দ্বীনের ব্যাপারে কোন জোর জোবরদস্তি নয়।
সুরা গাসিয়া ২১-২২ -আপনি উপদেশ দিন ,আপনি উপদেশ দাতা মাএ,আপনি তাদের শাসক বা দারোগা নন।
সুরা যারিয়াত ৫৫ – আপনি উপদেশ দান করুন , নিশ্চয়ই উপদেশ মুমিনকে উপকৃত করে

সর্বদা দাওয়াতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
সুরা নুহ ৫ ,৮ -৯ – হে আমার পালন কর্তা আমি আমার জাতি কে দিবা রাএি দাওয়াত দিয়েছি,তারপর আমি তাদেরকে প্রকাশ্য দাওয়াত দিয়েছি।ঘোষনা সহকারে ও গোপনে দাওয়াত দিয়েছি।
দাঈ যখন সময় পাবেন দাওয়াত দিবেন প্রকাশ্য-গোপনে ,ব্যক্তিগতভাবে-সমস্টিগতভাবে এবং রাতে ও দিনে ।
কোরআন ও সহী হাদীসের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়া।

সুরা ইউনুছ – ১৫ – আমার উপর যা অহি অবতীর্ন হয় তার অনুসরন করি ।যদি আমি আমার প্রতি পালকের নাফরমানী করি তাহলে কিয়ামতের কঠিন শাস্তির ভয় করি

সুরা নাজম ২৩ – রাসুল সাঃ নিজের পক্ষ থেকে মনগড়া কিছুই বলেননি তার নিকট যা অহি অবতীর্ন হয় তাই বলেন।


নিয়ত পরিস্কার ও বিশুদ্ধ করা -

বুখারি ,মুসলিম,মিশকাত – ১ - আমল সুমহ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।নিশ্চয়ই মানুষ যা নিয়ত করে তাই প্রতিফলিত হয়।

আল্লাহর জন্য আমল খালেছ করা

সুরা আনআম ১৬২ – হে নবী আপনি বলুন আমার ছলাত,আমার কোরবানি,আমার জীবন,আমার মরন বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহর জন্য।
জ্ঞানার্জন করা।
ধৈর্যশীল হওয়া।
সুরা আছর ৩ -আর যারা পরস্পরে ধৈর্যধারন করার উপদেশ দেয় তারা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সুরা বাকারা ৪৬ – তোমরা ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও।
আল্লাহর উপর ভরশা রাখা।
সুরা যুমার ৩৮ – হে রাসুল আপনি বলুন আমার জন্য আল্লাহই যথেস্ট ,ভরশাকারীরা আল্লাহর উপর ভরশা করে।
দাওয়াত অনুযায়ী আমল করা।

সুরা ছফ ২,৩ – হে ইমানদারগন তোমরা এমন কথা বলোনা যা তোমরা নিজেরায় কর না।তোমরা যা কর না তা বলা আল্লাহর নিকট কঠিন গোনাহের কাজ।

হক প্রকাশ করা এবং বাতিলের সাথে আপোষ না করা ।

সুরা বাকারা ১৭৪ – যারা সেসব বিষয় গোপন করে যা আল্লাহ কিতাবে নাযিল করেছেন তারা অল্প মুল্যে তা বিক্রি করে তারা আগুন দারা পেট পুরন করছে।

সর্বোত্তম চরিএের অধিকারী হওয়া

দাঈকে আল্লাহর পথে দাওয়াত প্রদানে অটল ও অবিচল হতে হবে।

৮ । কিছু টিপস।

আল্লাহর নাম দিয়ে শুরু করবেন ।

ইসলামের দাওয়াত দিতে হলে আপনাকে একটু কষ্ট করতে হবে youtube অনেক ভিডিও আছে “কিভাবে ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে”how to dawah islam”দিয়ে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন।

দাওয়াতের জন্য কোরআন বাংলায় পড়া ও কিছু সনদ( reference )মুখস্ত করতে হবে ।পুরো মুখস্ত হলে ভাল আরবি সহ মুখস্ত করলে আরও ভাল।যত বেশী মনে রাখা সম্ভব তত ভাল।হাদিসের ক্ষেএেও একই।উদ্দেশ্য থাকবে আল্লাহর খুশি,আল্লাহর আনুগত্য,আর রাসুলের বানী পৌছে দেওয়া।১০ নেকীর জন্য আরবি জানা দরকার।
দাওয়াতের সময় যখনই কিছু বলবেন দলীল (সনদ বা reference )সহকারে বলবেন । মনে না থাকলে বলার দরকার নেই ।বাড়ী ফেরৎ আসেন আবার পড়েন তারপর আবার দাওয়াতে যান।
ওয়েব সাইট এর reference দেওয়া ।
ভাল বই বা ভাল আলেমদের ওয়াজ বা লেকচার সিডি বা ডিভিডি গিফট দেওয়া।
দাওয়াত দেওয়ার সময় কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হলে ,তা জানা থাকলে অবশ্যয়ই ভাল করে চিন্তা ভাবনা করে উত্তর দিবেন ,না জানা থাকলে তাকে বলে দিবেন আমি এ বিষয় জানি না আমি নিজে জেনে আপনাকে জানিয়ে দিব।

দাওয়াতের সময় কমন প্রশ্নের মুখোমুখিঃ-?

আমরা যারা সাধারন মুসলমান আমরা কি করে দাওয়াত দিব?আমরা তো ভাল আরবি জানি না।শুধু মাএ ওজু থেকে শুরু করে নামাজ শেষ পর্যন্ত সব কিছু আরবিতে জানি আর কিছু দোয়া আরবিতে জানি।আর দাওয়াতের ক্ষেএে কাঊকে দাওয়াত দিতে গেলে বলে তুমি আরবি ভাল করে জান না তুমি আবার দাওয়াত দিতে এসেছ?দাওয়াত দেওয়ার জন্য আরবি জানতে হবে এমন কোন কথা নেই।ঐ লোকের চেয়ে কি আপনি ভাল না?আপনি নবী সাঃ এর ঐ হাদিসের উপর আমল করছেন – একটি আয়াত জানলে তা মানুষের কাছে পৌছে দাও।আল্লাহ সবাই কে একরকম মেধা দিয়ে পাঠাননি।

আর আপনি নামাজের মধ্য কি পড়েন তার মানে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে কারন তা নাহলে আপনি আল্লাহর কাছে গাধা ।সুরা যুমার ৫ নং আয়াত - যারা মানে জানে না তাদেরকে আল্লাহ গাধা বলেছে।তারা তৌরাত বহন করেছিল আর আপনি কোরআনের কিছু অংশ একই কথা।আরবি শেখাও চালিয়ে যাতে হবে।
২।এত বড় বড় আলেম কি ভুল জানে?তারা কি ভুল করছে?


এই কথা Non Muslim দের কথা।যখন ইসলামের প্রচার শুরু হয় তখনকার দিনের Non Muslim রা এই একই কথা বলত।

৩।তোমরা তো বিদআত সৃষ্টি করছ।
এই কথা Non Muslim দের কথা।যখন ইসলামের প্রচার শুরু হয় তখনকার দিনের Non Muslim রা মোহাম্মদ সাঃ বা সাহাবী রাঃ দের বলত তুমি বা তোমরা বাপ দাদার ধর্মের মধ্য বিদআত সৃষ্টি করছ।যদিও তাদের সাথে কারও তুলনা চলেনা।তারা (সাহাবী রাঃ)এই উম্মতের শ্রেষ্ট উম্মত।

বিদায় হজ এর ভাষণ

শুক্রবার, ৯ জিলহজ, ১০ হিজরী সনে আরাফার দিন দুপুরের পর রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লক্ষাধিক সাহাবির সমাবেশে হজের সময় এই বিখ্যাত ভাষণ দেন। হাম্‌দ ও সানার পর স্বীয় ভাষণে ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মা’বুদ নেই। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন। তিনি তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন। আর তিনি একাই বাতিল শক্তিগুলো পরাভূত করেছেন। হে আল্লাহর বান্দারা! আমি তোমাদের আল্লাহর ইবাদত ও তাঁর বন্দেগির ওসিয়ত করছি এবং এর নির্দেশ দিচ্ছি। হেল লোক সকল! তোমরা আমার কথা শোন। এরপর এই স্থানে তোমাদের সাথে আর একত্রিত হতে পারব কি না জানি না। হে লোক সকল! আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, হে মানবজাতি! তোমাদের আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে পয়দা করেছি এবং তোমাদের সমাজ ও গোত্রে ভাগ করে দিয়েছি যেন তোমরা পরস্পরের পরিচয় জানতে পারো। তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই
আল্লাহর দরবারে অধিকতর সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী, যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া অবলম্বন করে, সব বিষয়ে আল্লাহর কথা অধিক খেয়াল রাখে। ইসলামে জাতি, শ্রেণীভেদ ও বর্ণবৈষম্য নেই। আরবের ওপর কোনো আজমের, আজমের ওপর কোনো আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তেমনি সাদার ওপর কালোর বা কালোর ওপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। মর্যাদার ভিত্তি হলো কেবলমাত্র তাকওয়া।
আল্লাহর ঘরের হিফাযত, সংরক্ষণ ও হাজিদের পানি পান করানোর ব্যবস্থা আগের মতো এখনো বহাল থাকবে।
হে কুরাইশ সম্প্রদায়ের লোকরা! তোমরা দুনিয়ার বোঝা নিজের ঘাড়ে চাপিয়ে যেন আল্লাহর সামনে হাযির না হও। আমি আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমাদের কোনোই উপকার করতে পারব না।
যে ব্যক্তি নিজের পিতার স্থলে অপরকে পিতা বলে পরিচয় দেয়, নিজের মাওলা বা অভিভাবককে ছেড়ে দিয়ে অন্য কাউকে মাওলা বা অভিভাবক বলে পরিচয় দেয় তার ওপর আল্লাহর লা’নত।
ঋণ অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। প্রত্যেক আমানত তার হকদারের কাছে অবশ্যই আদায় করে দিতে হবে।
কারো সম্পত্তি সে যদি স্বেচ্ছায় না দেয়, তবে তা অপর কারো জন্য হালাল নয়। সুতরাং তোমরা একজন অপরজনের ওপর জুলুম করবে না। এমনিভাবে কোনো স্ত্রীর জন্য তার স্বামী সম্পত্তির কোনো কিছু তার সম্মতি ব্যক্তিরেকে কাউকে দেয়া হালাল নয়।
যদি কোনো নাক, কান কাটা হাবশি দাসকেও তোমাদের আমির বানিয়ে দেয়া হয় তবে সে যত দিন আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের পরিচালিত করবে, তত দিন অবশ্যই তার কথা মানবে, তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করবে।
শোনো, তোমরা তোমাদের প্রভুর ইবাদত করবে। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত যথারীতি আদায় করবে, রমজানের রোজা পালন করবে, স্বেচ্ছায় ও খুশি মনে তোমাদের সম্পদের জাকাত দেবে, তোমাদের রবের ঘর বায়তুল্লাহর হজ করবে আর আমিরের ইতা’আত করবে, তা হলে তোমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারবে।
হে লোক সকল! আমার পর আর কোনো নবী নেই, আর তোমাদের পর কোনো উম্মতও নেই।
আমি তোমাদের কাছে দু’টো জিনিস রেখে যাচ্ছি। যত দিন তোমরা এ দু’টোকে আঁকড়ে থাকবে, তত দিন তোমরা গুমরাহ হবে না। সে দু’টো হলো আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত।
তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি থেকে বিরত থাকবে। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা দীনের ব্যাপারে এই বাড়াবাড়ির দরুন ধ্বংস হয়েছে।
এই ভূমিতে আবার শয়তানের পূজা হবে এ বিষয়ে শয়তান নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে তোমরা তার অনুসরণে লিপ্ত হয়ে পড়বে। এতে সে সন্তুষ্ট হবে। সুতরাং তোমাদের দীনের বিষয়ে তোমরা শয়তান থেকে সাবধান থেকো। শোনো, তোমরা যারা উপস্থিত আছো, যারা উপস্থিত নেই তাদের কাছে এই পয়গাম পৌঁছে দিয়ো। অনেক সময় দেখা যায়, যার কাছ পৌঁছানো হয় সে পৌঁছানেওয়ালার তুলনায় অধিক সংরক্ষণকারী হয়।
তোমাদের আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। তখন তোমরা কী বলবে? সমবেত সবাই সমস্বরে উত্তর দিলেনঃ আমরা সাক্ষ্য দিব, আপনি নিশ্চয় আপনার ওপর অর্পিত আমানত আদায় করেছেন, রিসালতের দায়িত্ব যথাযথ আনজাম দিয়েছেন এবং সবাইকে নসিহত করেছেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আকাশের দিকে পবিত্র শাহাদাত অঙ্গুলি তুলে আবার নিচে মানুষের দিকে নামালেন।
হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো। হে আল্লাহ। তুমি সাক্ষী থাকো।

আমি কেন মুসলমান???


যে নিজেকে নাস্তিক বলে প্রচার করে তার কিছু প্রশ্ন এবং আমার পক্ষথেকে উত্তর এই গ্রুপে যারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করেন তাদের কাছে প্রশ্নঃ ১)আপনি কেন মুসলিম? ২)কোরান যে আল্লাহর বাণী তা আপনি কিভাবে জানলেন/বিশ্বাস করলেন? ৩)মুহাম্মদ সঃ যে শেষ নবী ও আল্লাহর প্রেরিত রসুল তা কিভাবে নিশ্চিত হলেন?


এই তিনটি প্রশ্নের মাঝেই আজকালকার মডারেট মুসলিম নামধারী হাজারো মুনাফেকের মুনাফিকির কারন লুকিয়ে আছে।উত্তর দিতে পারবেন? দেখুনতো আপনি মুসলিম না মুনাফেক?

-----------------------------------------------------

উত্তর: আল্লাহ পাকের প্রশংসা এবং নবী মুহাম্মদ (স:) এর উপর সালাম। প্রথমেই আমি বলে রাখি আমার কথার চেয়ে সুস্টি কর্তা এবং তার মননিত রাসূলের কথার মূল্য বেশি, তাই এই পোস্টে আমি শুধুমাত্র কুরআন এবং সহীহ হাদিস দিয়ে উত্তরগুলো বের করার চেস্টা করবো ইন শা আল্লাহ। আর একটি কারণ হলো Schrodinger's Cat পোস্টের মাধ্যেম মুসলমানদের মুনাফিক বানানোর একটি পায়তারা চলছে, তাই যুক্তি নয় রেফারেন্স দিয়ে উত্তরগুলি দিচ্ছি।।।

প্রশ্ন: ১)আপনি কেন মুসলিম?

উত্তর: সাধারণত মানুষ বিভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করে তার পারিবারিক প্রভাবের কারণে, কেউ মুসলমান হয় তার পিতা মুসলমান বলে, কেউ হিন্দু বা খ্রস্টান তার পিতৃ পরিচয়ের কারণে।

দেখে নেই হাদিস কি বলে, প্রতিটি নবজাতকই জন্মলাভ করে ফিতরাতের উপর। এরপর তার মা-বাবা তাকে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে। বুখারী শরীফ: ১২৭৫, ১২৭৬, ১৩০২, ৪৪১৩ ই:ফা:

একই কথা আছে পবিত্র কুরআনে, তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর ফিতরাত, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। সূরা রুম:৩০

আর আমার মুসলমান হওয়ার আরো কারণ আছে, 

০১. ইসলাম ন্যায় বিচার শেখায় কারণ সবাই ন্যায় বিচার পেতে চায়: হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত। সূরা নিসা: ১৩৫ 

এই বিষয়ে আরো অনেক আয়াত আছে, যেমন, সূরা বাকারা: ২৮২, সূরা নিসা: ৫৪, ৬৫, সূরা মায়দা: ৮,৪২, সূরা আন’আম: ১৫২, সূরা নাহাল: ৭৬, সূরা সা’দ:২২, সূরা জুমার:৬৯, ৭৫ সূরা আম্বিয়া: ৪৭, সূরা আস শুরা: ১৫, 

০২. সকল নবী-রাসূল মুসলমান ছিলেন: এরই ওছিয়ত করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে কখনও মৃত্যুবরণ করো না। সূরা বাকারা: ‌১৩২ 

০৩. মুসলমানদের জন্য আল্লাহই যথেস্ট: হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট। সূরা আনফাল: ৬৪

০৫. আল্লাহর কাছে একমাত্র মননিত ধর্ম ইসলাম: নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। সূরা আনআম: ১৯

০৬. আল্লাহ আমাদের নাম মুসলাম রাখেছেন: “...তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও,... [সুরা হাজ্জ্ব: ৭৮]”

প্রশ্ন: ২) কোরান যে আল্লাহর বাণী তা আপনি কিভাবে জানলেন/বিশ্বাস করলেন?

উত্তর: আমি সৃস্টি কর্তাকে বিশ্বাস করি তাই তার কিতাবকে বিশ্বাস করি। আর বিশ্বাস ব্যাপারটা সবসময়ই ধারনার উপর নির্ভর করে, যেমন, আপনার মা আপনাকে ভালবাসে, এখানে “ভালবাসাটা” আপনার বিশ্বাস, যেটা ধারনার ফসল। আরো একটি উধাহরণ দিলে পরিস্কার হওয়া যাবে, আপনার বাব যে আসলেই আপনার বাবা এটাও একটি বিশ্বাস। যাইহোক. এটা যে আল্লাহর বানী তার প্রমাণ অনেকবার আল্লাহ পাক নিজেই দিয়েছেন,

০১ প্রমাণ: সে(মুহাম্মদ) যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মিথ্যারোপ করবে।নিশ্চয় এটা কাফেরদের জন্যে অনুতাপের কারণ।নিশ্চয় এটা নিশ্চিত সত্য।অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ননা করুন। সূরা হাক্কাহ: ৪৪-৫২

০২. প্রমাণ: এমনিভাবে আমি সুস্পষ্ট আয়াত রূপে কোরআন নাযিল করেছি এবং আল্লাহ-ই যাকে ইচ্ছা হেদায়েত করেন। সুরা হাজ্জ্ব: ১৬

০৩. প্রমাণ: আলিফ-লাম-রা; এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে। সুরা ইবরাহীম: ১

০৪. প্রমাণ: বলুন, একে (কুরআন) তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান। সুরা ফুরকান: ৬

০৫. প্রমাণ: বস্তুতঃ যে কোন অবস্থাতেই তুমি থাক এবং কোরআনের যে কোন অংশ থেকেই পাঠ করা কিংবা যে কোন কাজই তোমরা কর অথচ আমি তোমাদের নিকটে উপস্থিত থাকি যখন তোমরা তাতে আত্ননিয়োগ কর। আর তোমার পরওয়ারদেগার থেকে গোপন থাকে না একটি কনাও, না যমীনের এবং না আসমানের। না এর চেয়ে ক্ষুদ্র কোন কিছু আছে, না বড় যা এই প্রকৃষ্ট কিতাবে নেই। [সুরা ইউনুস: ৬১] 

আরো দেখতে পারেন, সূরা আততারিক: ১৩, সূরা কাহাফ: ১, সুরা নিসা: ৮২, সুরা ফুরকান: ৩০-৩১, সুরা ত্বা-হা: ১১৩, সুরা রা’দ: ৩৭

প্রশ্ন ৩: মুহাম্মদ সঃ যে শেষ নবী ও আল্লাহর প্রেরিত রসুল তা কিভাবে নিশ্চিত হলেন?

উত্তর: এটাও কুরআনে বলা হয়েছে: 

০১. নবী (স:) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল: আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন। সূরা আল ইমরান: ১৪৪

০২. নবী (স:) আল্লাহর প্রেরিত শেষ রাসূল: “মুহাম্মদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।সূরা আহযাব:৪০”


এবার যারা নিজেদের নাস্তিক মনে করেন তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন: উত্তরের হিন্সও দিয়ে দিলামঃ-

০১). আপনি কেন নাস্তিক?

উত্তর: আমরা মুক্তমনা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেই কিন্তু গুরুদের প্রবন্ধে উৎফুল্ল হয়ে সত্য না খুজে কুতর্ক করি।

০২). আপনি কি সৃস্টি কর্তাকে বিশ্বাস করেন?

উত্তর: 

ক. সৃস্টি কর্তাকে মানি না।
খ. সৃস্টি কর্তাকে মানি কিন্তু ধর্মকে মানি না।
গ. শংসয়ের মধ্যে আছি।

৩.) আপনাদের নৈতিকতার ভিত্তি কি?

উত্তর: নৈতিকতার ভিত্তি বিবর্তনবাদ এবং সামাজিক কৃস্টি কালচার (যদিও আমরা নাস্তিকরা সেটাকেও গ্রাহ্য করি না)

যদি আপনারা সত্যিকারের নাস্তিক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান তবে এই ৩টি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিন। আপনাদের কাছে প্রশ্নগুলোর উত্তর আমার অভিজ্ঞতার ফসল। নাস্তিকদের মধ্যে আবার ৩টি দল যারা সৃস্টি করর্তাকে বিভিন্ন ভাবে বিচার করে , How lol! 

লক্ষনিও: ০১. হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। সূরা আল ইমরান:১০২ 

০২. আপনি অন্ধদেরও তাদের পথভ্রষ্টতা থেকে পথ দেখাতে পারবেন না। আপনি কেবল তাদেরই শোনাতে পারবেন, যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে। কারন তারা মুসলমান। সূরা রুম: ৫২

০৩. কোন সময় কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত। সূরা আল হিজর: ২ 

বিশেষ ভাবে নজর: যারা ধর্মকে মানে না তারা এই উত্তরে সন্তুস্ট হবে না।।।

সার্বিক সহযোগিতায়ঃ

আপনি কি ধূমপায়ী? তাহলে দেখুন ধূমপানের ৪১টি ক্ষতিকর দিক



কমই আছে। ধূমপানের ক্ষতি এবং পরিণতি সম্পর্কে জানার পর, তা হালাল বলার কোন অবকাশ আছে বলে আমি মনে করিনা। ধূমপানকারী দেশে সমাজে সর্বমহলে একজন ঘৃনিত ব্যক্তি হিসেবেই চিন্হিত হয়। যে ধূমপানের মত বদঅভ্যাসে আক্রান্ত, তাদের যে সব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা এখানে আলোচনা করা দরকার। নিম্নে এর কয়েকটি পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো:
ধূমপান একটি মারাত্মক ব্যাধি, অত্যন্ত ক্ষতিকর ও বিপদজনক রোগ। কিন্তু তিক্ত হলে ও সত্য বর্তমান দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষ এ ধরণের একটি মারাত্মক ব্যধিতে আক্রান্ত। এর ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে জানেনা, এমন লোক খুব
১. ধূমপান আল্লাহর নাফরমানি এবং তার হুকুমের অবাধ্য হওয়া। আল্লাহ নিশ্চয় তাকে শাস্তি প্রদান করবেন।
২. আল্লাহ তাআলা ধুমপান এবং এর সাথে সম্পৃক্ত সকলকে ঘৃনা করেন।
৩. ধুমপানকারী ফেরেশতাদের কষ্ট দেয়।
৪. যে সব ঈমানদার ব্যক্তিবর্গ ধুমপান করে না, একজন ধুমপায়ী তাদের কষ্টের কারন হয়।
৫. ধুমপান নির্মল পরিবেশকে দুষিত করে।
৬. ধুমপান অযথা খরচ, এতে কোন দুনিয়া ও আখেরাতের বিন্দু পরিমাণও উপকার হয় না।
৭. আর ধুমপান হল অপচয়, আল্লাহ তাআলা অপচয় করার ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি বলেন। তোমরা অপচয় কর না, নিশ্চয় অপচয়কারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না।
৮. এটির মাধ্যমে মন্দ এবং খারাপ কাজে সহযোগিতা হয়। আল্লাহ বলেন: তোমরা ভাল ও তাকোয়াপূর্ন কাজে সহযোগিতা কর আর মন্দ ও খারাপ কাজে সহযোগিতা কর না।
৯. ধুমপান দ্বারা ইসলামের দুশমনদের ইসলামের বিপক্ষে সহযোগিতা করা।
১০. ধুমপানকারী গুনাহের কাজকে হালকা করে দেখে। আর এ কথা আমাদের সকলের জানা, গুনাহকে হালকা করে দেখা সাধারন গুনাহ অপেক্ষা বড় পাপ। রাসূল (সাঃ) বলেন: আমার সকল উম্মতকে ক্ষমা করা হবে, তবে যারা গুনাহকে খাট করে দেখে তারা ব্যাতীত।
১১. ধুমপানের সকল সামগ্রী নাপাক ও দুর্গন্ধময় এবং ধুমপানকারীকেও এভাবে নাপাক ও দুর্গন্ধময় করে।
১২. ধুমপান দ্বারা অনর্থক কাজে মানুষের সময় নষ্ট হয়।
১৩. আর যারা ধুমপানের লেনদেন করে, তারা সাধারনত ইসলামের দুশমনদের সাথে সাদৃষ্য রাখে।
১৪. ধুমপান একজন মানুষের সম্ভ্রম হনন করে, সম্মান হানি ঘটায়।
১৫. ধুমপান একজন মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি বিলোপ করে এবং তা তার নির্বোধ বা জ্ঞান-হীন হওয়াকেই বুঝায়। কারন সে নিশ্চিত জানে যে ধুমপান তার জন্য ক্ষতিকর, তার পরও সে পান করে। এতে তার বোকামীই প্রকাশ পায়।
১৬. ধুমপানকারী তার ছেলে সন্তান এবং উত্তরসূরীদের জন্য একজন আদর্শহীন ব্যক্তিকে পরিণত হয়।
১৭. আর ধুমপানকারীর জন্য ইবাদত-বন্দেগী করা কঠিন হয়।
১৮. এ কাজটি ধুমপানকারীকে ইলম এবং যিকরের মজলিশ হতে দূরে রাখে এবং তাকে এ ধরনের মজলিশে উপস্হিত হতে হয়।
১৯. ধুমপান মানুষকে খারাপ মানুষের সাথে উঠা বসায় বাধ্য করে।
২০. ধুমপানের অভ্যাস একজন মানুষকে রোযা রাখা হতে বিরত রাখে। কারন, রোযা রাখলে সে ধুমপান করতে পারে না।
২১. ধুমপানের মাধ্যমে যেসব উপার্জন হয়, তা সম্পূর্ন হারাম। কারন, ধুমপানের ব্যবসা করা এবং এর লেনদেন সম্পূর্ন হারাম।
২২. ধুমপান মানুষের অপমৃত্যু ঘটায়। আন্তর্জাতিক স্বাস্হ সংস্হা তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যে, সমগ্র পৃথীবিতে ধুমপানের কারনে যত বেশি অপমৃত্যুর ঘটন ঘটে অন্য কোন রোগ-ব্যধির কারনে তত বেশি অপমৃত্যু ঘটেনা।
২৩. ধুমপানের কারনে ফুসফুসে ক্যান্সার, শরীরে তাপ, প্রদাহ, জ্বালাপোড়া ইত্যাদি দীর্ঘ মেয়াদী রোগব্যাধী দেখা যায়।
২৪. ধুমপানের কারনে কন্ঠনালীতে ক্যান্সার হয়।
২৫. ধুমপানের কারনে রক্তনালীগুলো দুর্বল হয় এবং অনেক সময় একজন ধুমপায়ীর রক্তের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
২৬. এটি স্মরনশক্তি কমিয়ে দেয় এবং মনোবল দুর্বল করে দেয়।
২৭. ইন্দ্রিয় ক্ষমতা দুর্বল করে; বিশেষ করে ঘ্রান নেয়া এবং স্বাদ গ্রহনের ক্ষমতা লোপ পায়।
২৮. অতিরিক্ত ধুমপানের কারনে দৃষ্টিশক্তি লোপ পায়।
২৯. মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বার বার সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়।

৩০. হার্ডের সাথে সম্পৃক্ত ধমনীগুলো ব্লগ হয়ে যায়।
৩১. বক্ষ ব্যাধীতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
৩২. রক্তের উচ্চ চাপের কারন হয়।
৩৩. যৌনশক্তি বিলুপ্ত হয়।
৩৪. হজমশক্তি কমায় এবং ধারনক্ষমতা লোপ পায়, আর তার শরীর ঢিলে হয়ে যায়।
৩৫. ধুমপায়ী সব সময় দুর্বলতা অনুভব করে এবং আতঙ্কগ্রস্ত থাকে।
৩৬. ধুমপানকারীর ঠোটে মুখে জিহ্বা গলনালি ইত্যাদীতে ক্যান্সার হয়।
৩৭. পাকস্হলী ক্ষত হতে থাকে।
৩৮. ধুমপানের কারনে যকৃত শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৩৯. ধুমপানের কারনে মুত্রথলিতে ক্যান্সার হয় এবং মুত্রথলি যক্ষায় আক্রান্ত হয়।
৪০. কিডনিতে ক্যান্সার হয়।
৪১. পেশাব বিশাক্ত হয়।
এতকিছুর পরও একজন জ্ঞানী লোকের জন্য ধুমপান করা উচিৎ……………?
আপনারাই মতামত দিন... 

Thursday, December 29, 2016

ধ্বংসাত্মক কয়েকটি কবিরা গোনাহ, যে গুলো আমাদের ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়ঃ




হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, যে কেউ কোনো মুআহিদকে (যাকে মুসলমানরা নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাকে) হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব হতেও পাওয়া যায়। (বোখারি/মেশকাত : ৩৩০৪)।
গোনাহ দুই প্রকার। ক. কবিরা। খ. সগিরা। আল্লাহ তায়ালা এবং রাসূল (সা.) যেসব গোনাহের ব্যাপারে কোনো শাস্তি আরোপ করেছেন এবং স্পষ্টভাবে তা থেকে বারণ করেছেন তাই হলো কবিরা গোনাহ। তবে কবিরার মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন স্তর। কোনো কোনো কবিরা গোনাহ আল্লাহ তায়ালার সত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত, আবার কোনোটা বান্দার সঙ্গে সম্পর্কিত। নিম্নে গুরুতর কয়েকটি কবিরা গোনাহ নিয়ে আলোচনা করা হলো :
ক. শিরক করা
কবিরা গোনাহের স্তরে এটি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং স্পর্শকাতর। মহান আল্লাহ তায়ালার সত্তা, গুণাবলি ও কার্যাবলিতে অন্য কাউকে শরিক করা বা সমকক্ষ জ্ঞান করাই শিরক। যেমন- আল্লাহর কাছে মোনাজাত করার মতো জীবিত বা মৃত কারও নিকট প্রার্থনা করা। কবর বা মাজারে সেজদা করা, কোনো ব্যক্তিসমষ্টি বা সংগঠককে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে বিশ্বাস করা, পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তায়ালাকে ছেড়ে এমন কাউকে ডাকবে না যে তোমার কোনো উপকারও করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। তারপরও যদি তুমি এরূপ কর তাহলে তুমি জালেমদের মধ্যে গণ্য হবে। (সূরা ইউনুস : ১০৬)।
অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন। (সূরা মায়িদা : ৩১২)।
শিরক ঈমানকে ধ্বংস করে দেয় এবং শিরককারী ব্যক্তি কাফের বলে গণ্য হয়। এমনকি শিরকই একমাত্র গোনাহ, যা ছাড়া আল্লাহ সব গোনাহকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ কখনও তার সঙ্গে শরিক করার গোনাহ ক্ষমা করবেন না। এছাড়া আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন।
খ. শিরকের পর মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে গর্হিত ও মন্দ কাজ হলো অন্যায়বিহীন মানুষের প্রাণনাশ করা। চাই তা ভ্রুণ হোক কিংবা অন্য কেউ। মানবহত্যা মানবতা বিধ্বংসী ও সুস্থ বিবেকবর্জিত অপরাধ। রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, কোনো মোমিনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার চেয়ে দুনিয়াটা ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল্লাহর কাছে অধিকতর সহজ। (তিরমিজি)।
এমনকি একজন মানুষের প্রাণনাশ করা সব মানবজাতির প্রাণনাশের নামান্তর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। (সূরা মায়িদা : ৩২)।
অন্যায়ভাবে হত্যাকারীর জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তির হুশিয়ারি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে জেনেশুনে হত্যা করবে তার শাস্তি হলো জাহান্নাম। যাতে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি গজব নাজিল করবেন ও তাকে লানত করবেন। আর আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। (সূরা নিসা : ৯৩)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, যে কেউ কোনো মুআহিদকে (যাকে মুসলমানরা নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাকে) হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব হতেও পাওয়া যায়। (বোখারি/মেশকাত : ৩৩০৪)।
এ হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নিরাপত্তা প্রদত্ত কাফেরের জানমালও মুসলমানের ন্যায় সংরক্ষিত। তাদের ওপর আঘাত হানাও জঘন্যতম অপরাধ।
উপরোক্ত বিধানগুলো হত্যাকারীর পাশাপাশি হত্যায় সহায়তা দানকারীর ক্ষেত্রেও সমান প্রযোজ্য।

Sunday, June 14, 2015

যমযম কূপ ও কাবা ঘর নির্মাণের ঘটনা




হযরত সাঈদ বিন জুবায়ের (রাঃ) হ’তে বর্ণিত,তিনি হযরত ইবনে আব্বাস  (রাঃ)  থেকে  বর্ণনা  করেন,একদা হযরত ইবরাহীম(আঃ)  শিশুপুত্র ইসমাঈল ও তাঁর মা হাযেরাকে নিয়ে বের হ’লেন  এমন অবস্থায় যে,হাযেরা তাকে দুধ পান করাতেন। অবশেষে যেখানে কা‘বাঘর অবস্থিত  ইবরাহীম (আঃ) তাঁদের উভয়কে সেখানে নিয়ে এসে মসজিদের উঁচু অংশে যমযম কূপের উপর অবস্থিত একটি বিরাট গাছের নীচে রাখলেন। সে সময় মক্কায় ছিল না কোন জন-মানব, ছিল না কোন পানির ব্যবস্থা। তিনি একটি থলিতে খেজুর ও একটি মশকে সামান্য পানিসহ তাদেরকে সেখানে রেখে ফিরে চললেন। তখন ইসমাঈল (আঃ)-এর মা পিছনে চলতে লাগলেন এবং বললেন,‘হে ইবরাহীম! এই উপত্যকায় আমাদের রেখে আপনি কোথায় যাচেছন?এখানে না আছে কোন মানুষ,না আছে পানাহারের ব্যবস্থা’। তিনি এ কথাটি তাঁকে বার বার বলতে থাকলেন। ইবরাহীম (আঃ) তাঁর কথায় কান না দিয়ে চলতেই থাকলেন। অতঃপর হযরত হাযেরা
জানতে চাইলেন,‘আল্লাহ কি আপনাকে এ কাজের নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন,হ্যা। তখন হাযেরা বললেন,‘তাহ’লে আল্লাহ আমাদেরকে ধ্বংস করবেন না’।অতঃপর তিনি ফিরে আসলেন। আর ইবরাহীম (আঃ) সামনে চললেন।চলতে চলতে যখন তিনি গিরিপথের বাঁকে পৌঁছালেন,যেখান থেকে স্ত্রী-পুত্র তাকে দেখতে পাচেছ না। সে সময় তিনি কা‘বার দিকে মুখ করে দু’হাত তুলে এ দো‘আ করলেন,‘হে প্রভু আমি আমার স্ত্রী ও পুত্রকে চাষাবাদহীন  বিরান  ভূমিতে  তোমার  সম্মানিত  গৃহের  সন্নিকটে  রেখে গেলাম। যাতে তারা ছালাত আদায় করতে পারে। তুমি কিছু লোকের অন্তরকে তাদের প্রতি আকৃষ্ট করে দাও এবং তাদেরকে ফলাদি দারা রূযী দান কর, যাতে তারা তোমার শুকরিয়া আদায় করতে পারে’ (ইবরাহীম ৩৭)।
 (এ দো‘আ করে  ইবরাহীম (আঃ) চলে গেলেন)। আর ইসমাঈল (আঃ)- এর মা  তাঁকে তার বুকের দুধ পান করাতেন আর নিজে সেই মশক থেকে পানি পান করতেন। অবশেষে মশকের পানি ফুরিয়ে গেলে তিনি পিপাসিত হ’লেন এবং তাঁর শিশুপুত্রটিও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল।  তিনি শিশুটির দিকে দেখতে লাগলেন। তৃষ্ণায় তার বুক ধড়ফড় করছে অথবা বর্ণনাকারী বলেন,সে মাটিতে পড়ে ছটফট করছে। শিশুপুত্রের এ করুণ অবস্থার প্রতি তাকানো অসহনীয়   হওয়ায়  তিনি  সরে  গেলেন  আর  তাঁর অবস্থানের  নিকটবর্তী পর্বত ‘ছাফা’-কে একমাত্র তাঁর নিকটতম পর্বত হিসাবে পেলেন। অতঃপর তিনি উপরে উঠে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় কি-না তা দেখতে লাগলেন। কাউকে না পেয়ে ছাফা পর্বত থেকে নেমে পড়লেন। এমনকি যখন তিনি নীচু ময়দান পর্যন্ত পৌঁউছালে, তখন তিনি তাঁর কামিজের এক প্রান্ত তুলে ধরে একজন ক্লান্ত-শ্রান্ত   মানুষের মতো ছুটে চললেন। অবশেষে ময়দান অতিক্রম করে ‘মারওয়া’ পাহাড়ের নিকট এসে তাঁর উপর উঠে দাঁড়ালেন। অতঃপর এদিকে সেদিকে তাকালেন,কাউকে দেখতে পান কি-না? কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলেন না। এমনিভাবে সাতবার দৌড়াদৌড়ি করলেন।
 হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন,নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন‘এজন্যই মানুষ হজ্জ ও ওমরাহ্‌ এর সময় উক্ত পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার সাঈ করে থাকে’। এরপর তিনি যখন ‘মারওয়া’ পাহাড়ে উঠলেন,তখন একটি শব্দ শুনতে পেলেন এবং তিনি নিজেকেই নিজে বললেন,একটু অপেক্ষা কর।তিনি একাগ্রচিত্তে মনোযোগ দিয়ে শুনে বললেন,‘তুমি তো তোমার শব্দ শুনিয়েছ। তোমার কাছে কোন সাহায্যকারী থাকলে আমাকে সাহায্য কর’। অতঃপর তিনি যমযমের নিকট একজন ফেরেশতা দেখতে পেলেন। যিনি নিজের পায়ের গোড়ালি বা ডানা দ্বারা মাটিতে আঘাত করলেন, আর অমনি মাটি ফেটে পানি বের হ’তে লাগল। তখন হাযেরা (আঃ) চারপাশে নিজ হাতে বাঁধ দিয়ে একে হাউযের ন্যায় করে দিলেন এবং কোষ দ্বারা মশকটি ভরে নিলেন। কিন্তু তখনও পানি উপচে উঠতে থাকল।
হযরত  ইবনে  আব্বাস (রাঃ) বলেন,নবী  করীম (ছাঃ)  বলেছেন,‘ইসমাঈলের মাকে আল্লাহ রহম করুন! যদি তিনি বাঁধ না দিয়ে বা কোষে ভরে পানি মশকে জমা না করে যমযমকে ঐভাবে ছেড়ে দিতেন,তবে উহা একটি কূপ না হয়ে প্রবাহমান ঝর্ণায় পরিণত হ’ত’। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি পান করলেন এবং তার পুত্রকে দুধ পান করালেন।
 ফেরেশতা তাকে (হাযেরা) বললেন,‘আপনি ধ্বংসের ভয় করবেন না। কারণ এখানে রয়েছে  আল্লাহর ঘর। এ শিশুটি এবং তার পিতা দু’জনে মিলে এখানে ঘর নির্মাণ করবে এবং আল্লাহ তাঁর  আপনজনকে ধ্বংস করবেন না’। ঐ সময় আল্লাহর ঘরের স্থানটি যমীন থেকে টিলার মত উঁচু  ছিল। বন্যা আসার ফলে তার ডানে বামে ভেঙ্গে যাচিছল। এরপর হাযেরা এভাবেই এখানে দিন যাপন করতে থাকেন।
 অতঃপর এক সময় ‘জুরহুম’ গোত্রের একদল লোক তাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিল অথবা রাবী বলেন ‘জুরহুম’ পরিবারের কিছু লোক ‘কাদা’ নামক উঁচু ভূমির পথ ধরে এদিকে আসছিল। তারা মক্কার নীচু ভূমিতে অবতরণ করল এবং একঝাঁক পাখিকে চক্রাকারে উড়তে দেখতে পেল । তখন তারা বলল,নিশ্চয় এ পাখিগুলো পানির উপর উড়ছে। আমরা এ ময়দানের পথ হয়ে বহুবার অতিক্রম করেছি। কিন্তু এখানে কোন পানি ছিল না। তখন তারা একজন কি দু’জন লোক সেখানে পাঠালো। তারা সেখানে গিয়েই পানি দেখতে পেল। তারা সেখান থেকে ফিরে এসে সকলকে পানির সংবাদ দিল। সংবাদ শুনে সবাই সেদিকে অগ্রসর হ’ল। রাবী বলেন, ইসমাঈল (আঃ)-এর মা পানির নিকট ছিলেন। তারা তাঁকে বলল,আমরা আপনার  নিকটবর্তী স্থানে বসবাস  করতে  চাই।  আপনি  আমাদেরকে অনুমতি দিবেন কি? তিনি জবাব দিলেন,হ্যা। তবে,এ পানির উপর তোমাদের কোন অধিকার থাকবে না। তারা হ্যা বলে তাদের মত প্রকাশ করল।
 হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন,এ ঘটনা হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর মাকে মানুষের সাহচর্যে থাকার সুযোগ করে দিল। অতঃপর তারা সেখানে বসতি  স্থাপন  করল  এবং  তাদের  পরিবার-পরিজনের  নিকটও  সংবাদ পাঠাল। তারপর  তারাও  এসে  তাদের  সাথে  বসবাস  করতে  লাগল। অবশেষে সেখানে তাদেরও কয়েকটি পরিবারের বসতি স্থাপিত হ’ল। আর ইসমাঈল (আঃ)ও যৌবনে উপনীত হলেন এবং তাদের কাছ থেকে আরবী ভাষা শিখলেন। যৌবনে পদার্পণ   করে তিনি তাদের কাছে অধিক আকর্ষণীয় ও প্রিয়পাত্র হয়ে উঠলেন। অতঃপর যখন তিনি পূর্ণ যৌবন লাভ করলেন,তখন তারা তাদেরই একটি মেয়ের সাথে ইসমাঈল (আঃ)-এর বিবাহ দিলেন।ইতিমধ্যে হাযেরা মারা গেলেন।ইসমাঈলের বিবাহের পর ইবরাহীম (আঃ) তাঁর পরিত্যক্ত পরিজনের অবস্থা দেখার জন্য এখানে আসলেন। কিন্তু তিনি ইসমাঈল (আঃ)-কে পেলেন না।তিনি ইসমাঈল(আঃ)-এর স্ত্রীর নিকট তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলেন। পুত্রবধূ বলল, ‘তিনি আমাদের জীবিকার খোঁজে বেরিয়ে গেছেন। অতঃপর তিনি তাদের জীবিকা ও অবস্থা জানতে চাইলেন। তখন ইসমাঈলের স্ত্রী দুর্দশার অভিযোগ করে বলল,আমরা অতি দূরবস্থায়, অতি টানাটানি ও খুব কষ্টে আছি’। এ কথা শুনে ইবরাহীম (আঃ) বললেন,‘তোমার স্বামী বাড়ী আসলে আমার সালাম দিয়ে তার ঘরের চৌকাঠ বদলিয়ে নিতে বলবে’।
 এরপর যখন হযরত ইসমাঈল(আঃ) বাড়ী আসলেন,তখন যেন তিনি কিছু আঁচ করতে পারলেন। তিনি বললেন, তোমার নিকট কোন ব্যক্তি এসেছিল কি?স্ত্রী বলল,হ্যা। আমাদের নিকট এরূপ একজন বৃদ্ধ এসেছিলেন এবং আমাকে আপনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছিলেন। আমি তাকে আপনার খবর দেই। তিনি আমাদের জীবন-জীবিকা কিভাবে চলছে তা জিজ্ঞেস করেন। তখন আমি তাকে বলি,আমরা খুব কষ্টে ও অভাবে আছি। ইসমাঈল (আঃ) বললেন, তিনি কি তোমাকে কোন বিষয়ের অছিয়ত করেছেন? তিনি বললেন,হ্যা। তিনি তার সালাম আপনাকে দেয়ার নিদের্শ প্রদান করেছেন এবং বলেছেন,তোমার দরজার চৌকাঠ পরিবতর্ন করে নিও। ইসমাঈল  (আঃ)  বললেন,‘উনি  আমার  পিতা। তিনি  আমাকে তোমাকে      পৃথক   করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।তুমি তোমার আপনজনদের কাছে চলে যাও’। অতঃপর তিনি তাকে তালাক দিয়ে অপর একটি মেয়েকে বিবাহ করলেন।
 অতঃপর ইবরাহীম (আঃ) এদের থেকে আল্লাহ যতদিন চাইলেন ততদিন দূরে থাকলেন। অতঃপর তিনি আবার তাদের দেখতে আসলেন। এবারেও তিনি পুত্রকে দেখতে পেলেন না। পুত্রবধূকে তার পুত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি উত্তর দিলেন,তিনি আমাদের জীবিকার খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন। এরপর ইবরাহীম (আঃ) বললেন,তোমরা কেমন আছ? অতঃপর তিনি তাদের জীবন যাপন ও অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তিনি বললেন,আমরা ভাল ও সচছল আছি এবং তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন। ইবরাহীম (আঃ) জিজ্ঞেস করলেন,‘তোমাদের প্রধান খাদ্য কি? সে বলল,গোশত। তিনি আবার বললেন,‘তোমাদের পানীয় কি?সে বলল,পানি।ইবরাহীম (আঃ) দো‘আ করলেন,‘হে আল্লাহ্‌! তাদের গোশত ও পানিতে বরকত দিন। রাসূল (ছাঃ) বলেন,তাদের জন্য তখন শস্য ছিল না। যদি থাকত তাহলে তিনি তাতে বরকত দানের জন্য দো‘আ করতেন। রাবী বলেন,মক্কা ব্যতীত অন্য কোথাও কেউ শুধু পানি ও গোশত দ্বারা জীবন ধারণ করতে পারে না। কেননা শুধু গোশত ও পানি জীবন যাপনের অনুকলূ হ’তে পারে না।
ইবরাহীম (আঃ) বললেন,‘তোমার স্বামী ঘরে ফিরে আসলে আমার সালাম দিয়ে তার ঘরের চৌকাঠ ঠিক রাখার কথা বলবে’। অতঃপর ইসমাঈল (আঃ) বাড়ী এসে বললেন, তোমাদের  নিকট কেউ এসেছিলেন কি?স্ত্রী বলল,হ্যা। একজন সুন্দর চেহারার বৃদ্ধ লোক এসেছিলেন এবং সে তাঁর প্রশংসা করল,তিনি আমাকে আপনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন। আমি তাঁকে আপনার সংবাদ জানিয়েছি। অতঃপর তিনি আমার নিকট আমাদের জীবন যাপন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমি তাঁ কে জানিয়েছি যে,আমরা ভাল আছি। ইসমাঈল (আঃ) বললেন, তিনি কি তোমাকে কোন বিষয়ের অছিয়ত করে গেছেন? সে বলল,হ্যা। তিনি আপনার প্রতি সালাম  জানিয়ে আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,আপনি যেন আপনার ঘরের চৌকাঠ ঠিক রাখেন।  ইসমাঈল (আঃ) বললেন,ইনি আমার পিতা,আর তুমিআমার ঘরের চৌকাঠ। তিনি আমাকে  তোমাকে স্ত্রী হিসাবে বহাল রাখার নিদের্শ দিয়েছেন।
আল্লাহর ইচ্ছায় হযরত ইবরাহীম (আঃ) বহুদিন পর এসে দেখেন তার পুত্র যমযম কূপের নিকটে  একটি বড় গাছের নীচে বসে তীর মেরামত করছেন। পিতাকে দেখে তিনি দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে গেলেন। অতঃপর পিতা ছেলের সাথে বা ছেলে পিতার সাথে সাক্ষাৎ হ’লে যেমন করে থাকে তাঁরা উভয়ে তাই করলেন। অতঃপর ইবরাহীম (আঃ) বললেন,‘হে ইসমাঈল! আল্লাহ আমাকে একটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। ইসমাঈল (আঃ) বললেন,আপনার প্রভু আপনাকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তা পালন করুন। তিনি বললেন, তুমি কি আমাকে সাহায্য করবে? ইসমাঈল বললেন,আমি আপনাকে  সাহায্য  করব।  ইবরাহীম  (আঃ)  বললেন,আল্লাহ  এখানে  আমাকে একটি ঘর নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। একথা বলে তিনি উঁচু  টিলাটির দিকে ইঙ্গিত করলেন যে,  এর চারপাশে ঘেরাও দিয়ে। তখনি বাপ-বেটা কা‘বাঘরের দেয়াল তুলতে লেগে গেলেন। ইসমাঈল (আঃ) পাথর আনতেন,আর ইবরাহীম (আঃ) নির্মাণ করতেন। পরিশেষে যখন দেওয়াল উঁচু হয়ে গেল,তখন ইসমাঈল (আঃ) (মাকবামে ইবরাহীম নামক) পাথরটি আনলেন এবং যথাস্থানে রাখলেন। ইবরাহীম (আঃ) তার উপর দাঁড়িয়ে নির্মাণ কাজ করতে লাগলেন। আর ইসমাঈল (আঃ) তাকে পাথর যোগান দিতে থাকেন। তারা উভয়ে আল্লাহর কাছে দো‘আ করলেন যে,‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এ কাজ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞাত’ (বাকবারাহ ১২৭)। তাঁরা উভয়ে আবার কা‘বাঘর তৈরি করতে থাকেন এবং কা‘বাঘরের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে এ দো‘আ করতে থাকেন,‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের পক্ষ থেকে কবলুকরুন। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছু শুনেন ও জানেন’
 (বাকবারাহ ১২৭; ছহীহ বুখারী হা/৩৩৬৪ ‘নবীদের কাহিনী’ অধ্যায়, অনুচেছদ-৯)।
 শিক্ষা :
১.  আললাহর হুকুমকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তাঁর সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে স্ত্রী-পুত্রসহ সবকিছু ত্যাগ করতে হবে।
২.  সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে হবে ও তাঁর উপর ভরসা করতে হবে। কোন অবস্থাতেই ধৈর্যহারা হওয়া চলবে না।
৩. পরিবার ও সন্তান সন্ততির জন্য দো‘আ করতে হবে।
৪.  একক নয়; বরং যৌথ উদ্যোগে সামাজিক কাজ সম্পাদন করতে হবে।
৫. হাযেরার মতো সুদৃঢ় ঈমানের অধিকারীণী হওয়ার জন্য মা-বোনদের সচেষ্ট হ’তে হবে।
৬.  আল্লাহর আনুগত্য ও ধৈর্যের পরিণাম সর্বদা কল্যাণকরই হয়।



Copyright @ 2013 ইসলামের দাওয়াত.