Thursday, December 29, 2016

Filled Under:

ধ্বংসাত্মক কয়েকটি কবিরা গোনাহ, যে গুলো আমাদের ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়ঃ




হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, যে কেউ কোনো মুআহিদকে (যাকে মুসলমানরা নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাকে) হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব হতেও পাওয়া যায়। (বোখারি/মেশকাত : ৩৩০৪)।
গোনাহ দুই প্রকার। ক. কবিরা। খ. সগিরা। আল্লাহ তায়ালা এবং রাসূল (সা.) যেসব গোনাহের ব্যাপারে কোনো শাস্তি আরোপ করেছেন এবং স্পষ্টভাবে তা থেকে বারণ করেছেন তাই হলো কবিরা গোনাহ। তবে কবিরার মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন স্তর। কোনো কোনো কবিরা গোনাহ আল্লাহ তায়ালার সত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত, আবার কোনোটা বান্দার সঙ্গে সম্পর্কিত। নিম্নে গুরুতর কয়েকটি কবিরা গোনাহ নিয়ে আলোচনা করা হলো :
ক. শিরক করা
কবিরা গোনাহের স্তরে এটি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং স্পর্শকাতর। মহান আল্লাহ তায়ালার সত্তা, গুণাবলি ও কার্যাবলিতে অন্য কাউকে শরিক করা বা সমকক্ষ জ্ঞান করাই শিরক। যেমন- আল্লাহর কাছে মোনাজাত করার মতো জীবিত বা মৃত কারও নিকট প্রার্থনা করা। কবর বা মাজারে সেজদা করা, কোনো ব্যক্তিসমষ্টি বা সংগঠককে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে বিশ্বাস করা, পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তায়ালাকে ছেড়ে এমন কাউকে ডাকবে না যে তোমার কোনো উপকারও করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। তারপরও যদি তুমি এরূপ কর তাহলে তুমি জালেমদের মধ্যে গণ্য হবে। (সূরা ইউনুস : ১০৬)।
অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন। (সূরা মায়িদা : ৩১২)।
শিরক ঈমানকে ধ্বংস করে দেয় এবং শিরককারী ব্যক্তি কাফের বলে গণ্য হয়। এমনকি শিরকই একমাত্র গোনাহ, যা ছাড়া আল্লাহ সব গোনাহকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ কখনও তার সঙ্গে শরিক করার গোনাহ ক্ষমা করবেন না। এছাড়া আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন।
খ. শিরকের পর মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে গর্হিত ও মন্দ কাজ হলো অন্যায়বিহীন মানুষের প্রাণনাশ করা। চাই তা ভ্রুণ হোক কিংবা অন্য কেউ। মানবহত্যা মানবতা বিধ্বংসী ও সুস্থ বিবেকবর্জিত অপরাধ। রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, কোনো মোমিনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার চেয়ে দুনিয়াটা ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল্লাহর কাছে অধিকতর সহজ। (তিরমিজি)।
এমনকি একজন মানুষের প্রাণনাশ করা সব মানবজাতির প্রাণনাশের নামান্তর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, কেউ যদি কাউকে হত্যা করে এবং তা অন্য কাউকে হত্যা করার কারণে কিংবা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তারের কারণে না হয়, তবে সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। (সূরা মায়িদা : ৩২)।
অন্যায়ভাবে হত্যাকারীর জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তির হুশিয়ারি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে জেনেশুনে হত্যা করবে তার শাস্তি হলো জাহান্নাম। যাতে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি গজব নাজিল করবেন ও তাকে লানত করবেন। আর আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। (সূরা নিসা : ৯৩)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, যে কেউ কোনো মুআহিদকে (যাকে মুসলমানরা নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাকে) হত্যা করবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব হতেও পাওয়া যায়। (বোখারি/মেশকাত : ৩৩০৪)।
এ হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, নিরাপত্তা প্রদত্ত কাফেরের জানমালও মুসলমানের ন্যায় সংরক্ষিত। তাদের ওপর আঘাত হানাও জঘন্যতম অপরাধ।
উপরোক্ত বিধানগুলো হত্যাকারীর পাশাপাশি হত্যায় সহায়তা দানকারীর ক্ষেত্রেও সমান প্রযোজ্য।

0 comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();

Copyright @ 2013 ইসলামের দাওয়াত.